চাকরির ইন্টারভিউতে যে ১৮টি ভুল করবেন না !

Rate this post

চাকরির ইন্টারভিউতে যে ১৮টি ভুল করবেন না ! ইন্টারভিউতে ভালো পারফরম্যান্স আপনার চাকরি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিবে। আবার ইন্টারভিউতে ভুল নিয়ে আসে বিপরীত ফলাফল। চাকরির বাজার দিনে দিনে কঠিন হয়ে পড়ছে। এখন নিয়োগ পরীক্ষায় ইন্টারভিউ পর্যন্ত পৌঁছানোই খুব কঠিন ব্যাপার। তাই সেখানে পৌঁছে গেলে নিয়োগকর্তাদের সামনে বসে আপনি নিশ্চয়ই আচমকা কোনো বেফাঁস কথা বলে সুযোগটা নষ্ট করতে চাইবেন না।

ইন্টারভিউয়ের সময় প্রতিটি কথা অবশ্যই আপনাকে ভেবেচিন্তে বলতে হবে। কেন আপনি চাকরিটি পেতে চান, এমন প্রশ্ন করা হলে জবাবে কারও কৃপাপ্রার্থিতা নয় বরং যোগ্যতাকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তুলে ধরুন। আপনি একটি ভালো চাকরি খুঁজছেন আর আপাতত কাজ চালানোর জন্য বর্তমান ইন্টারভিউটা দিতে এসেছেন, এমন কথা বললে কর্তৃপক্ষ আপনাকে অবশ্যই বিবেচনা করবে না।
প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আগ বাড়িয়ে নিজের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরাটা অপ্রয়োজনীয়।তবে কর্তৃপক্ষ এ ধরনের প্রশ্ন করলে, সেটা ভিন্ন কথা।

Table of Contents

চাকরির ইন্টারভিউতে যে ১৮টি ভুল করবেন না

**চাকরির ইন্টারভিউ টিপস


১. দেরিতে উপস্থিত হওয়াঃ

সরি, আমি দেরি করে এসেছি সময়ানুবর্তিতার গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। দেরি করে যাওয়াটাই একটা বড় ত্রুটি, অজুহাত দেখানোটা আরও বড় ভুল। যথাযথ সময়ে ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত হওয়া আপনার সময়নিষ্ঠতার পরিচায়ক। এজন্য দেরিতে উপস্থিত হলে ইন্টারভিউ গ্রহণকারীদের কাছে প্রথমেই আপনার একটি নেতিবাচক ধারণা জন্মাতে পারে। কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই চাইবে না, আপনি দেরি করে অফিসে আসবেন। চেষ্টা করুন হাতে একটু সময় নিয়ে যাত্রা শুরু করার, যাতে নির্ধারিত সময়ের আগে আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত থাকতে পারেন।

২. যথাযথ পোশাক না পরাঃ

ইন্টারভিউর সময় যথাযথ ও মার্জিত পোশাক পরা খুব জরুরি একটি বিষয়। মানানসই পোশাক না পরলে আপনি নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাসী মনোভাব ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হবেন, যা পুরো ইন্টারভিউ জুড়ে আপনার দুর্বলতার প্রকাশ ঘটাবে।

৩. আপনি কি ধরণের প্রশ্ন করতে পারবেন নাঃ

**আপনাদের বার্ষিক ছুটি ও অসুস্থ কর্মীদের জন্য নীতিমালাটা কী রকম প্রশ্নটা রীতিমতো অশোভন। এতে মনে হয়, নিয়োগ পাওয়ার আগেই আপনি প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার পরিকল্পনা করছেন।

**আপনাদের বার্ষিক ছুটি ও অসুস্থ কর্মীদের জন্য নীতিমালাটা কী রকম প্রশ্নটা রীতিমতো অশোভন। এতে মনে হয়, নিয়োগ পাওয়ার আগেই আপনি প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার পরিকল্পনা করছেন।

**আমি ফোনটা একটু ধরব অনেক চাকরিপ্রার্থীই মনে করেন, ইন্টারভিউ চলাকালে ফোন কল বা এসএমএসে সাড়া দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এটা একেবারেই অনুচিত।

**পাঁচ বছর পর আপনি নিজেকে কোন পর্যায়ে দেখতে চান এ প্রশ্নের জবাবে কখনোই বলবেন না, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায়।’ কারণ, উত্তরটা ঠিক মনে হলেও এতে আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষার ঘাটতি প্রকাশ পায়।

**আমি আগে যেখানে চাকরি করতাম, সেই প্রতিষ্ঠানটা জঘন্য এ ধরনের মন্তব্য শুধু যে অপেশাদারই তা নয়, বরং আপনার চারিত্রিক সংকীর্ণতারও প্রকাশ। নতুন চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার আগে আপনার আগের কর্মস্থলে যোগাযোগ করতে পারে। কাজেই নিজের সম্ভাবনাটা নষ্ট করবেন না।

**প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ নয় প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এমন কোনো মন্তব্য করবেন না, যাতে সে সম্পর্কে আপনার পূর্ণ অজ্ঞতা প্রকাশ পায়। খোঁজখবর নিয়েই যেকোনো ইন্টারভিউতে যাওয়া উচিত। কর্তৃপক্ষ সে রকমই আশা করে। তাই বলতে পারেন, “আপনাদের ওয়েবসাইটটি একনজরে দেখেছি”।

**প্রশ্নকর্তার ওপর বিরক্তি নয় রেগে গিয়ে প্রশ্নকর্তার ওপর রাগ করে বসবেন না। তাঁরা আপনার মানসিক দৃঢ়তা যাচাইয়ের জন্য কখনো কখনো আপনাকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করতে পারেন। এসব পরিস্থিতিতে আপনার ধৈর্য, ভদ্রতা ও পেশাদারি আচরণ প্রত্যাশা করা হয়।

**পূর্ব ধারণা ঠিক নয় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ আপনার সম্পর্কে আগে থেকেই জানে বা জীবনবৃত্তান্তে লিখে দিয়েছেন, এমন ভেবে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলবেন না। বরং যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তি ও ভুল-বোঝাবুঝি এড়িয়ে স্পষ্ট ও নির্ভুলভাবে নিজের সম্পর্কে বলুন।

**আপনাদের প্রতিষ্ঠানের পোশাকটি (ইউনিফর্ম) কি আমাকে পরতেই হবে। ইন্টারভিউতে এ ধরনের প্রশ্ন অবান্তর। কারণ, ইউনিফর্মের বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত।

**এখানে সুযোগ পেলে চাকরির কোন দিকটা আপনার সবচেয়ে ভালো লাগবে এমন প্রশ্নের জবাবে কখনোই বলবেন না। বেতন, মধ্যাহ্নবিরতি, সহকর্মীদের সঙ্গ অথবা ছুটির দিনগুলো। কারণ, কর্তৃপক্ষ আপনার কাছ থেকে আরও বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর আশা করে।

৪. দৃষ্টিকটু অঙ্গভঙ্গি করাঃ

ইন্টারভিউর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মার্জিত, ভদ্র এবং নম্র স্বভাব বজায় রাখা। ইন্টারভিউ চলাকালীন আপনার চলাফেরা এবং অঙ্গভঙ্গি সাবলীল এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ হওয়া আবশ্যিক। তাই ইন্টারভিউয়ের সময়ে এমন কোন অঙ্গভঙ্গি করা যাবে না, যা দেখতে দৃষ্টিকটু এবং অভদ্রতার সামিল।

৫. সঠিকভাবে প্রশ্নের উত্তর না দেয়া বা আমতা আমতা করাঃ

প্রশ্নোত্তর পর্ব চলার সময় প্রার্থী হিসেবে আপনাকে দৃঢ়তার সাথে সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। আপনার উত্তর হওয়া চাই স্পষ্ট, সাবলীল এবং যুক্তিসঙ্গত। উত্তর দেয়ার সময় আমতা আমতা করা কিংবা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে না বলতে পারা আপনাকে অন্য প্রার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে রাখতে পারে।

৬. প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়াঃ

প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন কখনো এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। চেষ্টা করুন সব প্রশ্নের উত্তর দেবার। প্রশ্নটি সম্পর্কে যতটুকু ধারণা আছে, তা সাবলীল ও স্পষ্টভাবে গুছিয়ে বলুন। কোন প্রশ্নের উত্তর একদমই জানা না থাকলে “Sorry, I don’t know” অথবা “দু:খিত, আমি জানি না” বলে উত্তর দিন।

৭. বর্তমান বা আগের চাকরি সম্পর্কে নিন্দা করাঃ

ইন্টারভিউর সময় কোন অবস্থাতেই বর্তমান কিংবা আগের কোন চাকরি বা চাকরিদাতার নামে নিন্দা করা উচিত নয়। বরং চাকরি ছাড়ার একটি যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ করুন।

৮. অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেখানোঃ

একজন প্রার্থী হিসেবে ইন্টারভিউ বোর্ডে অবশ্যই আপনাকে আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ় ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিতে হবে। তবে কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস প্রদর্শন কাম্য নয়। এতে আপনার প্রতি বিরূপ ধারণা জন্মাতে পারে প্রশ্নকর্তার।

৯. মিথ্যা বলা বা ভুল তথ্য দেয়াঃ

ইন্টারভিউ বোর্ডে নিজের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, ব্যক্তিগত বিষয় ইত্যাদি সম্পর্কে মিথ্যাচার করা বোকামির সামিল। এসব বিষয়ে ভুল তথ্য দিলে পরবর্তীতে আপনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে চাকরি হারানোর সম্ভাবনাও রয়েছে।

১০. বারবার ক্ষমা চাওয়াঃ

ইন্টারভিউ চলাকালীন ঘন ঘন “sorry” বা “দুঃখিত” শব্দটি ব্যবহার করলে আপনার সামগ্রিক মূল্যায়ন ও গ্রহণযোগ্যতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া নিজের অভিজ্ঞতা কিংবা যোগ্যতায় কোন ঘাটতি থাকলে সেটি সম্পর্কে বারবার ক্ষমা চাওয়া বা নিচু মনোভাব প্রকাশ করা আপনার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।

১১. বর্তমান বা আগের চাকরি সম্পর্কে নিন্দা করাঃ

ইন্টারভিউতে কোনোভাবেই বর্তমান কিংবা আগের কোনো চাকরি বা চাকরিদাতার নামে নিন্দা করা উচিত নয়। বরং চাকরি ছাড়া বা ছাড়তে চাওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ করুন।

১২. প্রশ্নকর্তার কথায় মনোযোগ না দেয়া অথবা তাকে কথা বলার মাঝখানে থামিয়ে দেওয়াঃ

প্রশ্নকর্তার কথা মনোযোগ দিয়ে না শুনলে অথবা তাকে কথা বলার মাঝে থামিয়ে দিলে প্রশ্নকর্তা বিরক্ত হতে পারেন। ইন্টারভিউ চলার সময় একজন প্রার্থীর উচিত প্রশ্নকর্তার সব কথা সতর্কভাবে শোনা ও তার কথা পুরোপুরি শেষ হবার পর উত্তর দেয়া।

১৩. ভুল অনুমান করাঃ

ইন্টারভিউতে প্রশ্নকর্তার কোনো প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ভুল অনুমান করা ক্ষতিকর। সময় নিন। ভালো করে বুঝুন তিনি কি জিজ্ঞেস করছেন। অনুমান না করে বরং তার কাছ থেকে আবার প্রশ্নটি জেনে নিয়ে তারপর উত্তর দিন।

১৪. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না আনাঃ

অনেকে সঙ্গে করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে ভুলে যান। ইন্টারভিউতে যেসব কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হতে পারে, সেগুলো মনে করে সঙ্গে করে রাখতে হবে। 

১৫. আপনি কোম্পানির জন্য কী করতে পারবেন যা অন্য কেউ পারবে না ?

আপনার মধ্যে ইউনিক কী রয়েছে তা জানার চেষ্টা করে কোম্পানি। আপনি বলতে পারেন আপনার মধ্যে আপনার অভিজ্ঞতা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং গ্রাহকদের সঙ্গে সফল আদানপ্রদানের ক্ষমতাই আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে।

১৬. আমাদের কাছ থেকে কত স্যালারি আপনি আশা করেন ?

নিশ্চিন্ত থাকুন এই প্রশ্নটি আপনার দিকে ধেয়ে আসবেই। এর উত্তর দেওয়ার জন্য অবশ্যই কোম্পানির বর্তমান আর্থিক অবস্থা, আপনার অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা মাথায় রাখবেন।

১৭. আপনি কেন এখানে কাজ করতে চান ?

ভুল করেও যেন বলে বসবেন না যে আপনার চাকরির খুব দরকার তাই। বরং বলা উচিত আপনি কম্পানির গুড উইলস ও আগের কাজকর্ম সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। এই কোম্পানি সেই দিক থেকে সম্পূর্ণ আপনার পছন্দ মতো।

১৮. ইন্টারভিউতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ ৭টি অঙ্গভঙ্গিঃ

ক্যারিয়ার বিল্ডার  এর এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ৯১ শতাংশ ক্ষেত্রেই ১৫ মিনিটের মধ্যে বুঝে নেয়া যায়,প্রার্থীটি চাকরির যোগ্য কিনা চাকরিপ্রার্থী কতটা পেশাদার এবং তিনি ওই পদের জন্য উপযুক্ত কিনা, নিম্নোক্ত ব্যাপারগুলো থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ক. অঙ্গভঙ্গিঃ সব সময় আপনার অঙ্গভঙ্গির বিষয়ে সতর্ক থাকুন। এ ক্ষেত্রে শুধু ইন্টারভিউ বোর্ডেই নয়, ওয়েটিং রুম ও রিসিপশনকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী দেখানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে, ঘাড় রাখতে হবে সম্প্রসারিত ও সোজা।এ অবস্থানে থাকলে আপনার মস্তিষ্কের রাসায়নিক অবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন হয়, যা আপনাকে শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী অনুভব এনে দেয়। শুধু প্রশ্নের উত্তর কীভাবে দিলেন, তার উপরেই চাকরির সবটুকু নির্ভর করে না। আপনার ভাবভঙ্গি কেমন তার উপরও অনেক কিছু নির্ভর করে।

খ. করমর্দন (Handshake)ঃ ইন্টারভিউ বোর্ডে করমর্দন অনেকাংশেই আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশের সূচক হিসেবে কাজ করে। ইন্টারভিউয়ার হিসেবে আপনি গেলে, আগেই হাত মেলানোর চেষ্টা করবেন না। এ জন্য তাদের হাত এগিয়ে আসার অপেক্ষা করুন। অনেকে আবার খুব জোরে করমর্দন করেন যা প্রশ্নকর্তার ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। ঘর্মাক্ত বা ভেজা হাতের কারো সঙ্গে হাত মেলানো সত্যিই বিরক্তিকর। আর, আপনার যদি এ সমস্যা থাকে তাহলে ইন্টারভিউয়ের আগেই প্রসাধনকক্ষে গিয়ে হাত ঠাণ্ডা পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে পরবর্তী কিছুক্ষণ আপনার হাত স্বাভাবিক থাকবে।

গ. চক্ষু সংযোগের অভাবঃ ইন্টারভিউতে গিয়ে আপনার অবশ্যই উপযুক্ত মাত্রায় চক্ষু সংযোগ বা দৃষ্টি বিনিময় করতে হবে। এটি করতে ব্যর্থ হলে ইন্টারভিউয়ার ভাববেন, আপনি হয় প্রশ্নের জবাব দিতে অক্ষম অথবা কোনো একটা মিথ্যা বা প্রতারণা করছেন।আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছানোর জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে একটি সফল ইন্টারভিউ। ইন্টারভিউ বোর্ডে পারফরম্যান্সের ওপরে একটি চাকরি পাওয়া না পাওয়া অনেক বেশি নির্ভর করে। আর তাই ইন্টারভিউকে ভয় না পেয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে এর বাধা উৎরে যেতে হবে।

ঘ. নার্ভাসঃ ইন্টারভিউতে আপনার চুল ঠিক করা বা চুল নিয়ে খেলা,মুখ স্পর্শ করা ও এ ধরনের অন্য যেকোনো কাজ আপনার নার্ভাসনেস প্রকাশ করবে। আমরা যখন আমাদের মুখ বা চুল স্পর্শ করি, তা আমাদের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির কথা জানান দেয়। ইন্টারভিউয়ারদের যদি আপনি এ বার্তা দিতে না চান, তাহলে নার্ভাস ও অপ্রস্তুত ভাব প্রকাশ করা বাদ দিন।কারও বসে থাকার মধ্যে অস্থিরতা দেখা যায়।ফলে অনবরত নড়াচড়া করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।নিজের মধ্যে অস্থিরতা প্রকাশ করাও অযোগ্য প্রমাণিত হওয়ার অন্যতম কারণ।ভালো করে প্রতিটি প্রশ্ন শুনুন। না বুঝতে পারলে নার্ভাস না হয়ে আবার জিজ্ঞেস করুন।

ঙ. অপ্রস্তুত ও অনাগ্রহী মনে হওয়াঃ ইন্টারভিউতে গিয়ে আপনি যদি দ্রুত নিজের পায়ের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকেন বা ক্রস ও সোজা করতে থাকেন ঘন ঘন, সেক্ষেত্রে ইন্টারভিউয়ারদের মনে হবে, আপনি একঘেয়ে হয়ে গেছেন। তার বদলে আপনার আগ্রহ প্রকাশ করুন সামনে সামান্য ঝুঁকে বসে, মাথা সোজা করে মনোযোগের সঙ্গে ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে।

চ. হাসতে ব্যর্থ হওয়াঃ হাসি আপনার আত্মবিশ্বাস, খোলা মন, আন্তরিকতা ও কর্মোদ্যমকে প্রকাশ করে। এটি অন্যদের পাল্টা হাসি দিতে অনুপ্রাণিত করে। ইন্টারভিউতে সামান্য পরিমাণ হাসিও যারা দিতে পারে না, তাদের গোমড়ামুখো ও দূরে থাকার অভ্যাস রয়েছে বলে ভেবে নেয় অনেকেই।

ছ. অতিমাত্রায় বন্ধুসুলভ হবেন নাঃ সাক্ষাৎকার কক্ষে প্রবেশের সময় অবশ্যই অনুমতি নিন। কক্ষে প্রবেশ করার পর সবাইকে সালাম দিন বা সম্ভাষণ জানান। যারা ইন্টারভিউ নেবেন তাঁদের সাথে তো বটেই, ঐ প্রতিষ্ঠানের সবার সাথে ভালো ব্যবহার করুন। কারণ, ইন্টারভিউ শুধু মিটিং রুমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, যেকোন কর্মীর কাছ থেকে প্রার্থী সম্পর্কে  মতামত নেওয়া হতে পারে। প্রশ্নকর্তার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের আভাস থাকতে পারে। এতে আপনার অস্বস্তি ঘুচবে। কিন্তু এর বিপরীতে আপনিও তাঁর সঙ্গে অতি বন্ধুত্বপরায়ণতা দেখাতে যাবেন না। সেখানে আপনি একজন  চাকরিপ্রার্থী ছাড়া আর কিছুই নন। কাজেই কারো বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করবেন না।

চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে অনেকেই নিজেকে ঠিকমতো উপস্থাপন করতে পারেন না।কেউ ভয় পেয়ে যান।সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো, যে প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন, তাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে কোনো ধারণা না নিয়েই যাওয়া। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মাথা চুলকানো ছাড়া আর করার কিছু থাকে না! আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং নেতিবাচক আচরণের কারণেও অনেকে বাদ পড়ে যান। মনে রাখবেন, পেশাদার জায়গায় গিয়েছেন। ফলে, ব্যক্তিগত কথাবার্তা যত দূর সম্ভব বাদ দিন। যাঁরা ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ আপনার পূর্ব-পরিচিত হতেই পারেন। কিন্তু সেটা যেন প্রকাশ না-পায়।

Leave a Comment